রোজা রাখা অবস্থায় বমি হলে রোজা ভাঙে কি না, এটি অনেক মুসলিমের মনে একটি সাধারণ প্রশ্ন। কিছু মানুষের ধারণা, মুখ ভরে বমি হলে রোজা ভেঙে যায় এবং কাজা করতে হয়। কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ সঠিক নয়। ইসলামিক বিধান অনুযায়ী, অনিচ্ছাকৃত বমি হলে রোজা ভাঙে না, এবং কাজা আদায় করারও প্রয়োজন নেই। তবে যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে, তাহলে তার রোজা ভেঙে যাবে এবং কাজা আদায় করতে হবে।
হাদিসের আলোকে বিধান
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
"যার অনিচ্ছাকৃত বমি হয়ে যায়, তাকে কাজা আদায় করতে হবে না (অর্থাৎ তার রোজা ভাঙবে না)। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত বমি করে, সে যেন কাজা আদায় করে (অর্থাৎ তার রোজা ভেঙে যাবে)।"
(জামে তিরমিযী, হাদিস ৭২০; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস ১৬৭৬; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদিস ১৫৫৭)
ইচ্ছাকৃত বমি ও রোজার বিধান
রোজা অবস্থায় যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে বা বমি আসার পর তা গিলে ফেলে, তাহলে তার রোজা ভেঙে যাবে এবং কাজা আদায় করতে হবে। এমনকি বমির পরিমাণ অল্প হলেও এটি প্রযোজ্য। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজজাক ৪/১৯৭)
কুলি করার সময় পানি গেলে কি হবে?
কুলি করার সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে পানি গলা দিয়ে পেটে চলে গেলে রোজা ভাঙবে না। তবে যদি রোজার কথা স্মরণ থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃতভাবে পানি গিলে ফেলা হয়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে এবং কাজা আদায় করতে হবে। যদি রোজার কথা স্মরণই না থাকে এবং পানি গিলে ফেলা হয়, তাহলে রোজা ভাঙবে না। (তাতারখানিয়া ৩/৩৭৮)
রোজা অবস্থায় অনিচ্ছাকৃত বমি হলে রোজা ভাঙে না এবং কাজা আদায়ের প্রয়োজন নেই। তবে ইচ্ছাকৃত বমি করা বা বমি গিলে ফেললে রোজা ভেঙে যায় এবং কাজা আদায় করতে হবে। এই বিধানগুলি জেনে রাখলে রোজা রাখার সময় কোনো দ্বিধা বা ভুল হবে না।